দর্পণ প্রতিবেদক: উত্তর সিলেটের ভারত সীমান্তবর্তী পর্যটন সমৃদ্ধ উপজেলা গোয়াইনঘাটের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ ফজলুল হকের নানা অপকর্মের জন্য গোয়াইনঘাটের সচেতন মহল পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছেন। এতদিন কলেজে সংঘটিত নানা অপকর্ম নিরবে সহ্য করলেও এবার এলাকার সচেতন মানুষজন প্রকাশ্যে এসে সাবেক প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপির ডানহাত নামে পরিচিত অধ্যক্ষ মোঃ ফজলুল হকের পদত্যাগ দাবি করছেন।
জানা গেছে, বর্তমান অধ্যক্ষ মো. ফজলুল হক আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় কলেজে প্রভাব বিস্তার করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তার এসব অপকর্ম নিয়ে কলেজের কোন শিক্ষক কিংবা শিক্ষার্থী কেউই কথা বলার সাহস পেতেন না। শুধু তাই নয় কলেজের শিক্ষকদের মধ্যে তিনি গ্রুপিং তৈরি করেছেন।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, অধ্যক্ষ ফজলুল হক ১৯৯৬ সালের ডিসেম্বরে তিনি প্রথমবারের মত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পান। এরপর প্রায় ১০ মাসের মত দায়িত্ব পালন করে আবারও ২০০৯ সালের নভেম্বর মাসে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে ২০১২ সালের ১৩ জুন পর্যন্ত একই দায়িত্ব পালন করেন। তারপর তিনি কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেন ২০১২ সালের ১৪ জুন। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত একটানা এই দায়িত্বে আছেন তিনি।
ফজলুল হকের যত অপকর্ম:
কলেজ সরকারি করণের দোহাই দিয়ে একদিকে শিক্ষকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা যেমন চাঁদা নিয়েছেন অন্যদিকে কলেজ ফান্ড থেকে লাখ লাখ টাকা যাতায়াত বিল (বিমান ভাড়া, যাহা তিনি প্রাপ্য নয়) নিয়েছেন। কলেজের স্থাবর- অস্থাবর সম্পত্তি সরকারকে হস্তান্তরের সময় কলেজ ফান্ডের টাকা হস্তান্তর না করে আত্মসাৎ করেছেন।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, কলেজে পাঁচ হাজার টাকার উপরে যেকোন কাজ করাতে হলে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে অনুমতিক্রমে ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করে তার মাধ্যমে করাতে হয় কিন্তু তিনি তা করেন নি। বরং বিনা টেন্ডারে কোটি কোটি টাকার কাজ করিয়েছেন এক জন শিক্ষক ও একজন নিজের মিস্ত্রির মাধ্যমে। একই সাথে ঐ মিস্ত্রি উনার বিল্ডিংয়েরও কাজ করেছেন। অর্থাৎ কলেজের টাকা দিয়ে নিজের বিল্ডিং বানিয়েছেন।
জানা গেছে, কলেজের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের জন্য সরকারি বরাদ্দ আনলেও ঐ কাজের টাকা কলেজ তহবিল থেকে নিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি নিজেই। এছাড়া কোভিডের কারণে ২০২০ সালের এইচ এস সি পরীক্ষা না হওয়ায় ছাত্র-ছাত্রীদের ফরম ফিলাপের অর্থ শিক্ষা বোর্ড ফেরত প্রদান করিলে ছাত্রছাত্রীদের বিতরণ না করে আত্মসাৎ করেন এই অধ্যক্ষ।
কলেজের একজন সাবেক শিক্ষার্থী নুরুল আলম এমদাদ বলেন, কোন গরিব ছাত্রছাত্রী হাফ বেতনের জন্য আবেদন করলে উনার একটা কমন ডায়লগ হচ্ছে- কলেজ থেকে কোন ছাড় দেওয়া যাবে না, আমার পকেট থেকে দুই মাসের বেতন দিয়ে দিচ্ছি। ওই শিক্ষার্থীর দাবি, উনি কলেজের টাকা ডাকাতি করে দুই মাসের বেতন দিয়ে বুঝান উনি অনেক বড় দানবির।
Leave a Reply